শিশুদের মধ্যে এনিমিয়া একটি কমন হেলদ প্রব্লেম। এনিমিয়া রোগের অন্যতম কারন হলো পর্যাপ্ত আয়রনের অভাব। হিমোগ্লোবিন হচ্ছে একধরনের প্রোটিন যা লোহিত রক্তকনিকার প্রধান অংশ; যা অক্সিজেন বহন করে বিভিন্ন সেলে নিয়ে যায়। এই হিমোগ্লোবিন তৈরীতে আয়রন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
★শিশুদের মধ্যে আয়রন ডেফিসিয়েন্সি এনিমিয়া কেনো হয়?
যেসকল কারনে শিশুদের মধ্যে আয়রন ডেফিসিয়েন্সি দেখা যায় সেগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
* লো-আয়রন ডায়েট
* দ্রুত দৈহিক বর্ধনকালে
* আয়রনের সঠিক এবজরবশন না হলে
* কোন কারনে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে।
★ শিশুদের জন্য আয়রনের চাহিদাঃ
সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুর দেহে আয়রন স্টোর থাকে,কিন্তু শিশুর বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে জমাকৃত আয়রনের পরিমান কম হতে থাকে। নিম্নে বয়স অনুযায়ী শিশুর দেহে আয়রনের চাহিদা উল্লেখ করা হলোঃ
৭-১২ মাস- ১১ মিলিগ্রাম
১-৩ বছর- ৭ মিলিগ্রাম
৪-৮ বছর – ১০ মিলিগ্রাম
৯-১৩ বছর- ৮ মিলিগ্রাম
১৪-১৮ বছর(মেয়ে)- ১৫ মিলিগ্রাম
১৪-১৮ বছর ( ছেলে)- ১১ মিলিগ্রাম
★যেসকল শিশুরা আয়রন ডেফিসিয়েন্সির ঝুঁকিতে রয়েছেঃ
১. প্রি-ম্যাচুয়র বেবি বা লো-বার্থ ওয়েট নিয়ে জন্মানো শিশু।
২.যেসকল বাচ্চারা ১ বছরের আগ পর্যন্ত গরুর দুধ খায়।
৩. শিশুর ৬ মাস বয়স হওয়ার পরেও কমপ্লিমেন্টারি ফুড না দেওয়া হলে শিশু আয়রন ডেফিসিয়েন্সি তে ভুগে।
৪. যেসকল শিশুদের ক্রনিক ডিজিজ থাকে তারা আয়রন ডেফিসিয়েন্সিতে ভুগে।
৫.যেসকল শিশুরা পর্যাপ্ত আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খায় না।
৬. যেসব শিশুর বয়সের তুলনায় অতিরিক্ত ওজন রয়েছে।।।
★শিশু আয়রন ডেফিসিয়েন্সিতে ভুগছে কিনা কিভাবে বুঝবেন?
শিশুর দেহে আয়রনের অভাব হলে শিশুর দেহঅভ্যন্তরীন ক্রিয়াকালাপে বাধা পড়ে। শিশুর স্বাভাবিক গ্রোথ ও ডেভেলপমেন্ট বাধাগ্রস্ত হয়। আপনার শিশুর মধ্যে নিম্নোক্ত লক্ষন গুলো দেখা দিলেই বুঝবেন শিশু আয়রন ডেফিসিয়েন্সিতে ভুগছেঃ
১. স্কিন ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া।
২. সারাক্ষণ দূর্বল অনুভব করা।
৩.হাত পা ঠান্ডা থাকা।
৪. গ্রোথ এবং ডেভেলপমেন্ট ধীরগতিতে হওয়া।
৫.ক্ষুদা হ্রাস পাওয়া।
৬.শ্বাস বেড়ে যাওয়া।
৭. আচরনে সমস্যা দেখা দেওয়া।
৮.অখাদ্য যেমনঃ মাটি,চক, সাবান ইত্যাদি খেতে চাওয়া।
★শিশুর দেহে কিভাবে আয়রন ডেফিসিয়েন্সি রোধ করবেন?
নবজাতকের আয়রন ডেফিসিয়েন্সি রোধ করতে শিশুকে প্রথম বছর থেকেই ব্রেস্ট মিল্ক অথবা আয়রন ফর্টিফাইড খাবার খাওয়াতে হবে। মনে রাখতে হবে, ১ বছর আগে পর্যন্ত শিশুকে গরুর দুধ দেওয়া যাবে না। কারন, গরুর দুধ পর্যাপ্ত আয়রন সরবরাহ করতে সক্ষম নয়। এছাড়াও শিশুর ৬ মাস পূর্ন হওয়ার পরই পরিপূরক খাবার দিতে হবে। এছাড়াও শিশুদের আয়রন সমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে। দেহে আয়রনের শোষন বাড়াতে সাথে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার এড করতে পারেন।
★শিশুদের জন্য আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের তালিকাঃ
১. গরুর মাংস স্ম্যাশড করা।
২.সীমের পিউরি
৩.ডিম স্ম্যাশড করা
৪.মুরগীর মাংস, মুরগীর কলিজা
৫.ওটমিল
৬. মিষ্টি আলু পিউরি
৭. ডাল/ছোলা সিদ্ধ করে স্ম্যাশড করা
৮. আয়রন ফর্টিফাইড সিরিয়ালস।
তাই শিশুদের এই বর্ধনকালে তার যেনো সঠিক গ্রোথ ও ডেভোলোপমেন্ট হয় এবং পর্যাপ্ত আয়রনের চাহিদা পূরনে সক্ষম হয় সেদিকে পেরেন্টসদের নজর রাখতে হবে!!
Ref:
1.https://www.mayoclinic.org/
2.https://health.